থানায় সাধারণ ডায়েরীপিতার স্বীকৃতি চাওয়া সেই শিক্ষার্থীকে প্রাণ নাশের হুমকি!
Published: 2020-05-18 14:54:46 BdST, Updated: 2021-01-24 01:23:27 BdST

সবুজ মিয়া, কালীগঞ্জ লাইভঃ শিমলা আক্তার! জন্মের পর থেকেই বাবার স্নেহ ভালবাসা আর আদরের স্বর্গীয় সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন ১৫ বছর বয়সি এই কিশোরী। বাবা জীবিত থেকেও কোনদিন কন্যাকে আদর করে বুকে টেনে নেয়নি। নিজ কন্যাকে স্বীকৃতি দিতেও নারাজ পাষণ্ড পিতা।
মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থী শিমলা আক্তার গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিনের ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের শেখ আজিজুর রহমান সুমনের কন্যা। কিন্তু জন্মের পর জন্মসনদে বাবার নাম লিখা ছাড়া আর কোন অধিকার সে পায়নি।
সম্প্রতি বুক ফাটা আর্তনাদে পিতার স্বীকৃতি চেয়েছিলো শিমলা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সংবাদ প্রকাশের পর শিমলাকে পিতৃ পরিচয় দিয়ে বাড়ী ফিরিয়ে নিতে আহ্বান জানায় সমাজের সচেতন মহল।
কিন্তু এ ঘটনাই যেন শিমলার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাণ নাশের হুমকির শিকার হতে হয়েছে নিজের জন্মদাতা পিতার কাছ থেকে। সোমবার সকালে শিমলার নানার বাড়ীতে গিয়ে শিমলা, তার মা, মামা ও নানা-নানীকে সুমনসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় দুপুরে শিমলা বাদী হয়ে বাবা সুমনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নং ৫৮০) করেন।
প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শিমলার বাবা শেখ আজিজুর রহমান সুমন।
সাধারণ ডায়েরীর সত্যতা স্বীকার করে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে শেখ আজিজুর রহমান সুমন একই গ্রামের ছবির মোল্লার মেয়ে সাথীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর সেই সূত্রে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। কয়েকদিন পর সাথী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে সুমন কেটে পড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এলাকাবাসীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। তৎকালীন কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আতাউর রহমান ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের সালিশের মাধ্যমে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। সাথীকে বাড়ী নিয়ে যায় সুমন ও তার পরিবার।
‘‘বিয়ের ৩ মাসের মধ্যেই ২০০৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারী মাসে স্থানীয় একটি হাসপাতালে জন্ম হয় আজকের এই শিমলার। ওই সময় সুমন হাসপাতালে তার স্ত্রী ও নবজাতককে রেখে পালিয়ে যায়। কিন্তু সাথীর দরিদ্র পরিবারের পক্ষে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা সম্ভব না হওয়ায় থানার ওসি তা পরিশোধ করেন এবং নগদ কিছু অর্থ ও শিশু খাদ্য দিয়ে বাড়ীতে পাঠান। এরপর থেকে একটি দিনের জন্যও সুমন তার স্ত্রী-কন্যার খোঁজখবর নেয়নি।’’
স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসায় শিমলা লেখাপড়া কারছেন বলে জানান তার নানা ছবির মোল্লা। সেখান থেকে এবার জেডিসি পরীক্ষা দিবে শিমলা।
ঢাকা, ১৮ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//টিআর