
পবিপ্রবি লাইভ: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এ্যানিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের ল্যাবরেটরি সমৃদ্ধ করতে নতুন করে যুক্ত হলো জলহস্তী কঙ্কাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের পৃষ্ঠপোষকতায়, এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ সাইদুর রহমান এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন(ডিভিএম) ডিসিপ্লিনের পাঁচজন শিক্ষার্থীর সার্বিক সহযোগিতায় কংকালটি প্রস্তুত করা হয়।
এ কাজে অংশগ্রহণকারী পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন মোঃ জাফরুল হাসান শুভ,রেজাউল ইসলাম শুভ,আব্দুল্লাহ আল ইমরান,ইসতিয়াক হোসেন রবিন,মো: তারিকুর রহমান তারেক।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘ ১১মাস ব্যাপী পরিশ্রমের মাধ্যমে কংকালটি পাঠদানের উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। যেটি বাংলাদেশে তৈরি প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জলহস্তী কংকাল। যা পবিপ্রবির পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারিয়ানদের জ্ঞান অর্জনের এক অমূল্য ভান্ডার হিসেবে দৃশ্যমান।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট লাইভস্টক সেক্টর গড়ার স্বপ্ন দেখা এই প্রতিভাবান তরুণরা জলহস্তীর কঙ্কাল তৈরির পাশাপাশি মেছো বাঘের কঙ্কাল, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কঙ্কাল ও কচ্ছপের কঙ্কাল তৈরির কাজ চলমান রেখেছেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে আদরের পোষাপ্রাণির (গরু,ছাগল, ভেড়া) কঙ্কাল তৈরিতেও তারা ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন।
মো জাফরুল হাসান শুভ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,‘ভেটেরিনারি শিক্ষা ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যে গবেষণা নির্ভর জ্ঞানার্জনের জন্য বন্যপ্রাণী নিয়ে শেখার উৎস বাংলাদেশে খুবই সীমিত। সারাদেশের প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত সকলের জ্ঞানের সেই স্পৃহার কথা চিন্তা করেই, জলহস্তীর কঙ্কাল নির্মাণে আমি ও আমার টিমের সদস্যগণ সবসময় একনিষ্ঠ ছিলাম। বর্তমানেও আমাদের কিছু কঙ্কাল তৈরির কাজ চলমান আছে।’
মো: তারিকুর রহমান তারেক বলেন, ‘নিজেদের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো কিছু করার ইচ্ছা ছিল। তাই জুনিয়র অবস্থা থেকেই এনাটমি ল্যাবে সময় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ শেখার চেষ্টা করেছি। স্মার্ট লাইভস্টক সেক্টর গঠনে জলহস্তীর মতো বৃহৎ স্তন্যপায়ীর কঙ্কাল তৈরি তার যৎসামান্য মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবকে সমৃদ্ধকরণে আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ সাইদুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘রংপুর চিড়িয়াখানায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে লিওন নামের জলহস্তীটি। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত’র একান্ত সহযোগিতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আব্দুল জব্বারের অনুমতিক্রমে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জলহস্তীর কংকালটি রংপুর চিড়িখানা হতে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আনা হয়।’
তিনি আরো বলেন,‘বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স এ কঙ্কাল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেখানে প্রাণির দৈহিক গঠন, উৎপত্তি, বয়স, লিঙ্গ নির্ধারণ, বিভিন্ন রোগ ও রোগে মৃত্যুর কারণ, প্রজাতির ভিন্নতাসহ নানাবিদ এনাটমিক্যাল ও এনথ্রোপোলজিক্যাল বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘এ ধরণের কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কাজে লাগে এমন গবেষণার কাজে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন,শুধু জলহস্তী কঙ্কাল নয়, আরো কয়েকটা প্রাণীর কঙ্কাল সংরক্ষণে কাজ করছে এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগ। এসময় তিনি কঙ্কাল সংরক্ষণের জন্য একটা কাচের ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ঢাকা, ২৩ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন//এমএফ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: