Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com
অভিনব উপায়ে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের পসরা সাজিয়েছেন কুবি ভিসি!

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৩, ২৩:৩৩

ভিসি প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈন

কুবি লাইভ: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কু্বি) মার্কেটিং বিভাগের সেই নির্দিষ্ট প্রার্থীকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন ভিসি প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈন। তাকে নিতে একের পর এক অনিয়মের পসরা সাজিয়েছেন তিনি। আজ রোববার (২৯ জানুয়ারি) তার ভাইবা বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার সুপারিশের কারণে আবু ওবায়দা রাহিদ প্রার্থীকে নিতে উঠে পড়ে লেগেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। ওই প্রার্থীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফল কুবি নির্ধারিত মানের চেয়ে কম। ফলে তাকে নিতে অভিনব উপায়ে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কুবি। বিজ্ঞপ্তিতে অননুমোদিত একটি অনুবিধি যোগ করা হয়। ওই অনুবিধিতে উল্লেখিত যোগ্যতাসমূহ নির্দিষ্ট ওই প্রার্থীর রয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি ওই বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষা থেকে ভাইবা বোর্ডের জন্য চারজন প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়। ওই চারজনের মধ্যে আবু ওবায়দা রাহিদও রয়েছেন। বাকি তিনজন হলেন আরিফুল ইসলাম পাটোয়ারী, গৌতম সাহা, ও রাবেয়া জান্নাত। এ ছাড়া বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ করা তালিকায় ওই প্রার্থীর নাম না থাকলেও রেজিস্ট্রার দপ্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করে তালিকায় ওই প্রার্থীর নাম যুক্ত করেন।

এদিকে, পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা যাবে এমন কিছু লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্রে উল্লেখ করা যাবে না—এমন নির্দেশনার পরও ওই প্রার্থী তার উত্তরপত্রে বিশেষ ‘চিহ্ন’ ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা চলাকালীন বিষয়টি ধরা পড়লে পরবর্তীতে পর্যালোচনার জন্য হল পরিদর্শকই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্রে তার স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন। তবে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়েছে কি না- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ, উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদেরকে শুধুমাত্র তাদের অংশটুকুই মূল্যায়ন করতে দেওয়া হয়েছে। সার্বিক মূল্যায়ন নিয়ে তাদের থেকে কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে একাধিক বোর্ড সদস্যের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তাদের অন্তত দু’জন সার্বিক মূল্যায়নের বিষয়ে তাদের কোনো মতামত জানতে চাওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন।

সাধারণত নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণের ক্ষেত্রে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা মিলে কাটমার্ক বা পাস নম্বর নির্ধারণ করে থাকেন। নিয়োগ বোর্ডের সভার কার্যবিবরণীতে তা উল্লেখ থাকে। ন্যূনতম ওই নম্বর পাওয়া প্রার্থীদেরই পরবর্তীতে ভাইবার জন্য ডাকা হয়। এর ফলে কে কত নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ হলো তা জানা যায়। তবে মার্কেটিং বিভাগের কাটমার্ক কত নির্ধারিত হয়েছিল-এ বিষয়ে জানেন না বোর্ড সদস্যরা। ভিসি নিজের মতো করেই প্রার্থীদেরকে মনোনোয়ন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বোর্ড সদস্যদের একজন এ বিষয়ে তার থেকে কিছু জানতে চাওয়া হয়নি মন্তব্য করে আর কথা বলতে রাজি হননি।

এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষা থেকে যেসকল প্রার্থীকে ভাইভা বোর্ডের জন্য মনোনীত করা হয়, তাদের তালিকা প্রকাশ্যে দেওয়ার রীতি থাকলেও কুবি ভিসি সেসবেও বিরত ছিলেন। মনোনীতদের শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে ফোন করে ভাইভার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অনিয়মের সুযোগ বিস্তৃত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের কথা বলে অযোগ্যদের নিতে যেরকম অনিয়ম করছেন, তাতে শিক্ষকের ওপর শিক্ষার্থীদের অশ্রদ্ধা তৈরি হবে। সর্বোচ্চ নির্বাহী হয়ে তিনি একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন। যা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়কেই পিছিয়ে দেবে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে ভিসি প্রফেসর ড. এএফএম আবদুল মঈনের ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ আসলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

 

ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম //এমএফ

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ