Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

''গদ্য সাহিত্যে সুফিয়া কামালের অবদান অপরিসীম''

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২২, ০৫:৪৭

আলোচনা সভা

জাবি লাইভ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জননী সাহসিকতা কবি সুফিয়া কামাল এর ১১১ তম জন্ম জয়ন্তী পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে 'সুফিয়া কামালের চেতনা ও সংগ্রামের উত্তরাধিকার' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২১ জুন (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ড. এ. আর মল্লিক লেকচার হলে সাঁঝের মায়া ট্রাস্ট এবং কলা ও মানবিকী অনুষদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. পারভীন জলী।

আলোচনা অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে সাঁঝের মায়া ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ড. মোতাহার আখন্দ বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী কয়েকজন ব্যক্তিত্ত্বের অন্যতম একজন সুফিয়া কামাল। যিনি সারাজীবন অন্যায়-অবিচারের পাশাপাশি সমাজ সংস্কার ও নারীর অধিকারের পক্ষে কথা বলে গেছেন। তার সাহসীকতার জন্য তিনি জননী সাহসিকা হিসেবে পরিচিত। এক সভায় আইয়ুব খান যখন এদেশের মানুষকে জানোয়ার বলে উল্লেখ করেছিলেন। তখন তিনি দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে জানোয়ারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেন।'

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখক ও আইনজীবী প্রমা ইসরাতের লেখা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সোলনারা আক্তার। প্রমা ইসরাতের রচিত প্রবন্ধ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, গদ্য সাহিত্যে সুফিয়া কামালের অবদান অপরিসীম। নারীকে প্রাধ্যান্য দিয়ে বেশিরভাগই গদ্য লিখেছেন তিনি। সেই সময় বাঙালি নারীদের যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে সে সময় তিনি লিখেছেন। হিল্লা বিয়ে, তালাক দেয়ার মতো বিভিন্ন বিষয় তার লেখার মধ্যে ফুটে উঠেছে।

তিনি আরও উল্লেখ করে বলেন, সুফিয়া কামাল বরাবরই পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে লিখেছেন। তার লেখা প্রতিটি চরিত্রই নিজের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি তার লেখায় এক নারীর প্রতি অন্য নারীর পাশে থাকার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। নারীর অর্থনৈতিক মুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। কবি সুফিয়া কামাল নারীবাদী ধারার সূচনার বাতিঘর। কেননা তার লেখার মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি নারী অধিকারের কথা উঠে এসেছে।

কবি পরিবারের পক্ষে কবির সর্বকনিষ্ঠ সন্তান সাঈদা কামাল স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে বলেন, মায়ের জীবনটা মনে হয় রূপকথার মতো। নবাব বাড়িতে জন্ম নিলেও সমস্যার কারণে সে সময় কলকাতায় অন্য রকম একটা পরিবেশে আসেন। মা বলতেন কলকাতায় এসে এক পয়সার মুড়িও খেতে হয়েছে। এভাবে তিনি তার জীবন সংগ্রাম করেছেন। তার এসব বিষয় আমার ভীষণ অবাক লাগে। তিনি ছিলেন স্ব-শিক্ষিত। বাংলা ভাষা শেখা সে সময় গর্হিত অপরাধ ছিল। তাই মা নানীর থেকে বাংলা লেখা শিখেছেন। বিভিন্ন লেখা পড়ে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই তার অবদান ছিল ছিল অপরিসীম।

সমাপনী বক্তব্যে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, কবি সুফিয়া কামাল শুধু একজন সমাজ সংস্কারক বা কবি নন, তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও নারী জাগরণের অগ্রদূত। বেগম রোকেয়া যেমন তার সময়ের প্রজন্মকে উজ্জীবিত করেছেন, ঠিক তেমনি তিনিও তার প্রজন্মকে করেছেন উৎসুক। তিনি বেগম রোকেয়ার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে কাজ করে গেছেন। সে সময় পাকিস্তান রাষ্ট্র যে অবরুদ্ধ রাখার নীতি গ্রহণ করেছিল, তিনি তা ভেঙে দেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তার সময়ের বাস্তবতা ও সমস্যাগুলো এবং সেই অনুযায়ী তিনি কাজ করে গেছেন আজীবন। তার হাত ধরে সমাজ অগ্রগামী হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা, নারী প্রগতিশীলতা তার কল্যানে অনেক দূর এগিয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, গবেষক ও প্রকাশক মফিদুল হকের উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও সঙ্গত কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তার রচিত মূখ্য আলোচনা তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান।

এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আরিফা সুলতানা, অধ্যাপক ড. ইমরান জাহান, সাঁঝের মায়া ট্রাস্ট ও কবি পরিবারের সদস্যবৃন্দ সহ প্রমুখ।

ঢাকা, ২১ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআর//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ