Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ ২০২৪, ৫ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় স্বপ্নের মেট্রোরেল

প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বার ২০২২, ০৩:১১

শিক্ষার্থীরা মেট্রোরেল নিয়ে কী ভাবছেন?

দেশে প্রথমবারের মত চালু হয়েছে দ্রুত গতির বাহন মেট্রোরেল। আজ ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পথে প্রথমবারের মত উড়াল দিলো মেট্রোরেল। মতিঝিল ও কমলাপুর পর্যন্ত পুরোপুরি চালু হলে বিশেষ সুবিধা পাবে নগরবাসী। মেট্রোরেল একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প হলেও এর সুবিধা অনেক। যাতায়াত সুবিধা, সময় সাশ্রয়, স্বল্প খরচ, অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, যানজট সহ এমন অসংখ্য সমস্যার সমাধান হচ্ছে এই মেট্রোরেলের মাধ্যমে। আধুনিক যুগে এই মেট্রোরেল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও কৌতুহলের কমতি নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা মেট্রোরেল নিয়ে কী ভাবছেন? তাদের ভাবনা গুলো তুলে ধরেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসলাইভ২৪ডটকম-এর জবি প্রতিনিধি রিদুয়ান ইসলাম

মেট্রোরেল ও বাংলাদেশের নতুন দিনের সূচনা

আধুনিক বিশ্বায়নের অন্যতম একটি যাতায়াত ব্যবস্থা হচ্ছে মেট্রোরেল ব্যবস্থা। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা একটি জনবহুল শহর ও যানবাহনের আধিক্যেতা হেতু যেকোনো স্থানে যাতায়াতের জন্য ঢাকাবাসীকে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। আর তার জন্য কম সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রকল্প চালু রেখেছে বর্তমান শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকার। সেই আধুনিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে মেট্রোরেল অন্যতম। ২৮ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়েছে বলে ঢাকাবাসী সহ সমগ্র দেশের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। যার বদৌলতে দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। মেট্রোরেল তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা শহরের এই অসহনীয় যানজট থেকে কিছুটা মুক্তির খোঁজ করা। "বাঁচবে সময়, বাঁচবে তেল, জ্যাম কমাবে মেট্রোরেল" এই স্লোগানকে সামনে রেখে মেট্রোরেল উদ্বোধন এর মাধ্যমে বাংলাদেশেরর ইতিহাসে এক দিন সূচিত হয়েছে।

তুষার মাহমুদ, বাংলা বিভাগ।

নারীদের পথচলা সুগম করবে মেট্রোরেল

ঢাকাবাসীর যাতায়াতের একটি সুবিধাজনক মাধ্যম হবে মেট্রোরেল। কারণ এটি দিনে লক্ষাধিক যাত্রী বহন করতে পারবে। আর নারীরা, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে মেট্রোরেলের মাধ্যমে। কারণ বর্তমানে যে গণপরিবহনগুলো রয়েছে সেগুলোতে নারীদের প্রায়ই হয়রানির মুখে পড়তে হয়। কিন্তু বিকল্প কোনো পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় তাদের বাধ্য হয়েই এসব কষ্ট স্বীকার করে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। এখন মেট্রোরেল চালু হলে নারীরাই সবচেয়ে বেশি মেট্রোরেল ব্যবহারে আগ্রহী হবে বলে আশা রাখি। বাংলাদেশে উন্নয়নের মাইলফলক বলা যায় এই মেট্রোরেলকে। নারীদের নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা হবে মেট্রোরেলে। এজন্য দেশের সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

সিদরাতুল মুনতাহা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ দিচ্ছে মেট্রোরেল

বহুল কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেল আজ বাংলাদেশে দৃশ্যমান। উন্নয়নের রোল মডেলকে আরো ত্বরান্বিত করতে যুক্ত হয়েছে এই মেট্রোরেল। মেট্রো রেল পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর লোকবলের প্রযয়োজন হবে, যা বাংলাদেশে অনেক কাজের সুযোগ তৈরি করবে। ইউএনবির মতে, প্রতিটি মেট্রো রেলস্টেশনে একটি অপারেটিং রুম, টিকিট কাউন্টার, লাউঞ্জ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট, প্রার্থনার স্থান, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, এসকেলেটর, লিফট এবং আরও অনেক কিছু থাকবে। এমন অনেক মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। যা আমাদের দেশের বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে সুফল বয়ে আনবে। আধুনিক যুগের এই সময়ে মেট্রোরেল বাংলাদেশের অনন্য এক উদাহরণ। এমন একটি মুহুর্তের সঙ্গী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।

খায়রুল হাসান আকাশ, ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগ।

অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা বাড়াবে মেট্রোরেল

মেট্রো রেল মূলত একটি দ্রুত পরিবহণব্যবস্থা যা বিশ্বের অনেক বড় শহরে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় গণপরিবহণের জন্য ‘ঢাকা মেট্রো রেল’ হলো ‘জাইকা’-এর অর্থায়নে একটি সরকারি প্রকল্প। এ ধরনের পরিবহণ মানুষের জীবনধারা পরিবর্তন করে এবং তাদের উৎপাদনশীল সময় বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকারের প্রতিটি মেগাপ্রজেক্টেরই মুনাফা অর্জনের বাণিজ্যিক দিক রয়েছে। মেট্রো রেল পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক লোকবলের প্রয়োজন হচ্ছে। যা বাংলাদেশে অনেক কাজের সুযোগ তৈরি করবে। আর এই কাজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি উপরে ওঠে আসবে। বর্তমান যুগে যেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা আমাদের খুবই নিকটে। এই মেট্রোরেলের মাধ্যমেই আমরা আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি করতে পারবো। মেট্রোরেলের মাধ্যমে ঢাকার টেকসই নগরায়ণ ও উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ হবে এমন একটা আশাবাদ আমাদের অনেকেরই আছে।

চৈতি আলম মিনু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

মেট্রোরেল দিবে সাশ্রয়ী পরিবহন সেবা

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় দুধরনের পরিবহণব্যবস্থা রয়েছে। একটি হলো পাবলিক বাস, লেগুনা এবং রিকশাসহ যাতায়াতের সাশ্রয়ী মাধ্যম। তবে অত্যধিক যানজট এবং অতিরিক্ত ভিড়সহ বিভিন্ন কারণের জন্য এ ধরনের পরিবহন ব্যবহার করার জন্য লড়াই করতে হয়। অন্যদিকে, সিএনজি এবং ট্যাক্সি ক্যাব পরিষেবাগুলোও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট হিসাবে উপলব্ধ, তবে সেগুলো তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। যদিও অনেক মানুষ পরিবহনের জন্য ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করে, তথাপি এটি সবার জন্য প্রণিধানযোগ্য বিকল্প নয়। মেট্রোরেল তাদের জন্য একটি সুবিধাজনক পরিবহণ পরিষেবা প্রদান করবে যারা ব্যয়বহুল গণপরিবহণ ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে কুলিয়ে উঠতে পারে না এবং সাশ্রয়ী পরিবহণের অভাবে ক্রমাগত ভোগান্তিতে পড়ে। এমন সব ভোগান্তির লাঘব হবে এই মেট্রোরেলের মাধ্যমে।

মেহেদী হাসান, গণিত বিভাগ।

মেট্রোরেল জনসাধারণের যাতায়াত সমস্যা সমাধান করবে

যোগাযোগের অন্যতম সহজ মাধ্যম রাজধানী ঢাকার মত এত বেশি জনবহুল শহরে চলাচলের জন্য প্রচলিত রিক্সা, সিএনজি বা অন্যান্য যানবাহন উপযুক্ত ছিল না। কারণ তাতে জনগণ একই স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারলেও রাস্তায় লেগে যেতো ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে তীব্র থেকে তীব্রতর জ্যাম। যার ফলে অনেকেরই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হতো। আবার দেখা যেত জ্যামে বসে থেকে জনগণকেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এই সমস্যার প্রতিকার করার জন্যই মূলত ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট চালু করার কথা ভাবা হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নানা প্রয়াসে অবশেষে ২০২২ সাল নাগাদ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ গত এক মাস ধরে বিশাল প্রস্তুতির মাধ্যমে অর্থাৎ কোন রাস্তা থেকে কতটুকু দূরত্বে ভাড়া কতটুকু হবে, সময় কতটা সাশ্রয়ী হবে ইত্যাদি নানা বিষয় চিন্তা করার পর আজ সর্বসাকুল্যে মেট্রোরেলে চলাচলের জন্য মেট্রোরেল কে উদ্বোধন করা হচ্ছে। আশা করি মেট্রোরেলের মাধ্যমে জনগণের এই সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব হবে।

সানজিদা মাহমুদ মিষ্টি, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।

সময়ে বাঁচাবে মেট্রোরেল

ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত একটি বাসে যেতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা এবং ভিড়ের সময়ে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। মেট্রো রেলে সময় লাগবে মাত্র ৪০ মিনিট। মিরপুর কিংবা উত্তরার দিকে যেতে প্রতিবারই ট্রাফিক সিগন্যাল আর যানযটের কারণে নাকাল হতে হয়। এখন মেট্রোরেলে অল্প সময়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাওয়া যাবে। মেট্রোরেল ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করবে। মেট্রোরেল নগরবাসীর যানজটের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব করবে। এমন স্বস্তির আশায় বুক বেঁধে আছেন অসংখ্য বাঙালি। আমরা চাই দেশের উন্নয়ন এমনভাবে অব্যাহত থাকুক। উন্নত দেশের মানগণ্ডিতে বাংলাদেশ পা দিক। তাই বলা যায়, এই সময়ে পদ্মাসেতুর পরে মেট্রোরেল আমাদের উন্নয়নের ধারক বাহক।

অনন্য প্রতীক রাউত, আইন বিভাগ।

ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ