Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

জুনোটিক রোগে ভয় নয়, সচেতনতাই মুখ্য

প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২২, ০০:১১

জুনোটিক রোগে ভয় নয়

মোঃ আশরাফুল হক রাকিব: প্রতি বছর ৬ জুলাই বিশ্ব জুনোসিস বা প্রাণীবাহিত রোগ দিবস পালন করা হয়। ফরাসি জীববিজ্ঞানী লুই পাস্তুর ১৮৮৫ সালের এই দিনে সর্বপ্রথম জুনোসিস রোগ র‍্যাবিসের বিরুদ্ধে প্রথম টিকা আবিষ্কার করেছিলেন। তার সাফল্যকে সম্মান জানাতে ৬ জুলাই বিশ্ব জুনোসিস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিবসের উদ্দেশ্য হলো সেই রোগগুলির উপর আলোকপাত করা যা প্রাণীদের থেকে উদ্ভূত হয়ে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে।

জুনোসিস কখনো জুনোটিক (বহুবচন) রোগ নামেও পরিচিত। প্রতিবারের ন্যায় এবারও পালিত হচ্ছে দিনটি। এবারের আলোচ্য বিষয়বস্তু, "আসুন জুনোটিক ট্রান্সমিশনের চেইন ভেঙে ফেলি"।

Centers for Disease Control and Prevention (C.D.C) এর একটি সমীক্ষার তথ্যমতে, বিদ্যমান সমস্ত সংক্রামক রোগের ৬০% জুনোটিক এবং অন্তত ৭০% উদীয়মান সংক্রামক রোগ প্রাণীদের মধ্যে উদ্ভূত হয়। বিশ্বে আনুমানিক ১৫০ টি জুনোটিক রোগ বিদ্যমান বলে জানা যায়।

সম্প্রতি ত্রাস সৃষ্টিকারী মহামারী কোভিড-১৯ এর মতো জুনোসিস ডিজিজটি বাদুড় থেকে মানুষে ছড়িয়েছিল এবং চীনের উহান থেকে এটি ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারনা করা হয়। এটিকে জুনোসিসের একটি নিখুঁত উদাহরণ বিবেচনা করা যায়। এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে কোভিড-১৯ দ্বারা ৩.৯ মিলিয়ন মৃত্যু হয়েছে। জলাতঙ্কও জুনোটিক রোগের আরো একটি বড় উদাহরণ। এছাড়া এ তালিকায় উল্লেখযোগ্য এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, ইবোলা, সোয়াইন ফ্লু, তড়কা, ব্রুসেলোসিস, প্লেগ প্রভৃতি।

জুনোটিক প্যাথোজেন ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবীও হতে পারে। সরাসরি প্রাণীর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বা পরোক্ষভাবে খাদ্য, পানি বা পরিবেশের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে রোগ গুলি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি কেবল বন্য প্রাণী থেকে নয় পোষা প্রাণী এবং খামারের প্রাণী থেকেও মানুষের দেহে আসতে পারে। জুনোটিক সংক্রমণে প্রাণীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মানুষ জুনোটিক রোগ থেকে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে রয়েছে, বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রাপ্তবয়স্করা।

জুনোটিক রোগগুলি থেকে পরিত্রাণে অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রয়েছে যা মানুষ জুনোটিক রোগের সংক্রমণ এড়াতে নিতে পারে। যেমন সাবান এবং পানি দিয়ে সঠিকভাবে হাত ধোয়া, অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা এবং মাছি, মশা এবং টিক্সের কামড় রোধ করতে প্রতিরোধক স্প্রে করা। নিরাপদে খাদ্য সংরক্ষণ ও সঠিক বর্জ্য অপসারণ, পশুদের কামড় এবং আঁচড় এড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ। যা, রোগের বিস্তার কমানোর জন্য কার্যকর উপায়।

মানুষের পাশাপাশি বসবাসকারী প্রাণীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে আমাদের জোর দিতে হবে । কারণ আমরা যখন প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধ করতে পারবো, তখন আমরা নিজেদের স্বাস্থ্যও রক্ষা করতে পারবো।

লেখক: মোঃ আশরাফুল হক রাকিব
শিক্ষার্থী, এনিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।

ঢাকা, ০৬ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ